ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় । সেরা টিউটোরিয়াল 2024

আপনি কি এখনো বেকার আছেন? অথবা আপনি কি অনার্স বা মাস্টার্স পাশ করে অলস সময় পার করছেন? অথবা আপনি কি এখনো সদ্য ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে বসে আছেন? অথবা আপনি অনার্স বা মাস্টার্সে অধ্যয়নরত? তাহলে আমি আপনাকে একজন ফ্রেশার হিসেবে পরিগণিত করব। আর এসব প্রশ্নের উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয় তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ আমি এই পোস্টে ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আসুন ফ্রেশার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় । সেরা টিউটোরিয়াল 2024
ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় । সেরা টিউটোরিয়াল 2024

 

ফ্রেশার কাকে বলে?

ফ্রেশার তাদেরকেই বলব যারা অনার্স বা মাস্টার্স পাশ করে কোনো চাকরি পায়নি। যারা পাশ করে বসে আছেন এবং বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছেন কিন্তু চাকরি পাচ্ছেন না তাদেরকে আমরা চাকরির ক্ষেত্রে ফ্রেশার হিসেবে গণ্য করব।

সাধারণত বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা প্রাইভেট মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে সদ্য পাশ করা শিক্ষার্থীদের চাকরি দিতে চায়না। কারণ যারা ফ্রেশার আছেন তারা কাজের প্রতি ইন্টারেস্ট না থেকে কোনো বিষয়েই পারদর্শী বা অভিজ্ঞ হয়ে উঠেন না তাই তাদেরকে প্রতিষ্ঠানের মালিক চাকরি দিতে চান না। এজন্য এই ক্যাটেগরির ব্যক্তিকে আমরা ফ্রেশার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করব।

আরো পড়ুনঃ পাকাপাকি ছড়া থেকে প্রশ্ন ও উত্তর | ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৩য় অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায়

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় নিয়ে ইন্টারনেটে অনেকেই ব্রাউজ করে থাকেন কিন্তু কার্যকরি পোস্ট পান না। কারণ, ফ্রেশারদের নির্দিষ্ট একটি কাজের প্রতি দক্ষতা না থাকার কারণে তারা কার্যকরি পোস্ট খুঁজে পান না। ইন্টারনেটে কিছু খুঁজে পেতে হলেও আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রতি কিছু দক্ষতা দেখাতে হবে অথবা সার্চ করার টেকনিক জানতে হবে। যাহোক, ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার জন্য অনেক বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হয় তাই নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে নিজেকে কোনো একটি কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তোলার কোনো বিকল্প কিছু নেই। নিচ থেকে দেখে নিন আপনাকে কি কি কাজের প্রতি দক্ষ হতে হবে।

নির্দিষ্টি একটি বিষয়ে দক্ষঃ

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় এর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরি দিকটি হলো নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে আপনাকে দক্ষ হতে হবে। আপনি যদি বর্তমানের প্রেক্ষাপটে সকল বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠেন তাহলে আপনি কোনো বিষয়েই চাকরি পাবেন না। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট একটা বিষয়ে পারদর্শী লোকদের চাকরি দিয়ে থাকেন। যেসব প্রতিষ্ঠান অনেক বড় সেখানে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে লোক খোঁজার জন্য বিজ্ঞাপন দেখা যায়। আর সেখানে বিভিন্ন ক্যাটেগরির ফ্রেশাররা আবেদন করে থাকেন।

আবার আপনি যদি ফটো এডিটিং এ পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি শুধু গ্রাফিক ডিজাইনেই চাকরি পাবেন। কিন্তু এর পাশাপাশি ওয়েব ডেভেলপমেন্টেও কিছু দক্ষতা অর্জন করে রাখবেন কিন্তু আপনি শুধু গ্রাফিক ডিজাইনেই দক্ষ হয়ে উঠবেন। যখন কোথাও সিভি ড্রপ করবেন তখন আপনাকে গ্রাফিক ডিজাইনের জন্যই ভাইভাতে কল করা হবে।

আরো দেখুনঃ অর্থ বুঝে বাক্য লেখার নিয়ম | ৬ষ্ঠ শ্রেণি বাংলা ৩য় অধ্যায়

এর পাশাপাশি ভাইভা বোর্ড যখন দেখবে যে আপনার ওয়েব ডেভেলপমেন্টেও অভিজ্ঞতা রয়েছে তখন সেটা অতিরিক্ত অভিজ্ঞতা হিসেবে ধরা হবে। কিন্তু আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন থেকে শুরু করে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অটোক্যাড, ভার্চুয়াল এসিসট্যান্ট, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদিতে দক্ষ হতে চান তাহলে আপনি কোনো কাজেই দক্ষ হয়ে উঠবেন না। তাই আপনি যদি নির্দিষ্ট একটা বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠেন তাহলে ফ্রেশার হিসেবে চাকরির পাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে।

এজন্য নির্দিষ্ট একটা বিষয় বা সেক্টরে ট্রেনিং করে অভিজ্ঞ হয়ে উঠতে পারেন। মনে রাখবেন আপনি একজন ফ্রেশার তাই নিজেকে একটা নির্দিষ্ট একটা বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠবেন তখন দেখবেন আপনাকে কেউ কাজের জন্য খোটা দিতে পারবেনা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট করাঃ

সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট করাও ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় এর মধ্যে একটি। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট করে রাখলেই হবেনা সেখানে একটিভ থাকা সহ নিজের প্রোফাইল ১০০% আপডেট করে সবসময় ক্লায়েন্টের উত্তর দিতে হবে। কয়েকটি প্রফেশনালদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট করা যায় যেমন লিংকডইন, পিন্টারেস্ট, কোরা, মিডিয়াম, ফেসবুক ইত্যাদি। এসব প্ল্যাটফর্মে একাউন্ট করতে হবে। একাউন্ট করার পর একাউন্ট সবসময় আপডেট রাখতে হবে।

প্রোফাইলে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা যোগ করে দিতে হবে। নিজের কাজের স্যাম্পল হিসেবে পোস্ট করা যেতে পারে এজন্য। আপনি যদি ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে চান তাহলে আপনাকে বিভিন্ন ফোরাম, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটিভিটি শেয়ার করার জন্য নিজেকে আপডেট করা সহ এসব প্ল্যাটফর্মে দক্ষ হতে হবে। প্রফেশনালদের জন্য জনপ্রিয় একটি সোশ্যাল মিডিয়া হলো লিংকডইন।

এখানে অনেক কোম্পানির মালিকেরা চাকরির অফার করে থাকে। সেসব চাকরির অফারের পোস্টে আপনাকে ভদ্র বা প্রফেশনালভাবে কমেন্ট করে তাদের ঠিকানায় সিভি ড্রপ করতে হবে। যখন দেখবে যে আপনি তাদের লিংকে কমেন্ট করেছেন তখন তারা আপনাকে পজিটিভলি দেখবে। ভাববে যে আপনি তাদের কাজের প্রতি অনেক আগ্রহী। তখন তারা আপনাকে ভাইভার জন্য ডাকবে। এভাবে যদি আপনাকে ভাইভার জন্য নির্বাচন করে থাকে তাহলে আপনাকে তারা ফ্রেশার হিসেবে মনে করবেনা এবং এতে আপনার চাকরি পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যাবে।

এই পোস্টটি আপনার জন্যঃ যেভাবে পরিস্থিতি অনুযায়ী যোগাযোগ করবেন | ব্যাখ্যাসহ সমাধান 2024 | ৬ষ্ঠ শ্রেণি বাংলা ১ম অধ্যায়

তাই এসব প্ল্যাটফর্মে নিজেকে সবসময় আপডেট থাকতে হবে। যখনই তারা পোস্ট করবে তখনই কমেন্ট করতে হবে। চাকরির জন্য বিভিন্ন সেমিনারে যোগ দিয়ে সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে পিন করে রাখতে হবে পিন্টারেস্টে। এসব ছবি যখন কোম্পানির মালিক দেখবে তখন ভাববে যে আপনি একজন পেশাদার লোক এবং এসব কাজের সাথে আপনি অনেক আগে থেকেই জড়িত আছেন। তাই ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে হলে আপনাকে কিছু অতিরিক্ত কাজ করতেই হবে। এরকম অতিরিক্ত কাজ করলে ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যাবে।

স্কিল বিল্ডআপ করাঃ

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে এমপ্লয়াবিলিটি স্কিলস ডেভেলপ করতে হবে যেমন: ভালো কমিউনিকেশন স্কিলস, লিডারশিপ স্কিলস, টিম ওয়ার্ক, এডাপ্টিবিলিটি, টেকনিকাল জ্ঞান ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাড়াতে হবে। তাই ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে হলে এসব জ্ঞানের প্রতি সযত্নবান হয়ে অর্জন করা সুযোগ বাড়াতে হবে। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আপনাকে যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে হবে। এজন্য বিভিন্ন সভা, সেমিনারে যোগ দিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সাথে মেলামেশা করতে হবে। আপনি যখন বিভিন্ন সভা, সেমিনার, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যোগ দিবেন তখন দেখবেন আপনার লিডারশিপ করার এবিলিটি বেড়ে যাবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াকালীন আপনাকে টিম ওয়াইজ কাজ করতে হবে। মনে রাখবেন প্রতিটি বেসরকারি কোম্পানিতে টিম ওয়ার্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন আর সেখানেই নের্তৃত্ব দেওয়ার প্রবণতা বেড়ে তুলবেন। আপনি যদি ফ্রেশার হিসেবে জব পেতে চান তাহলে এসব দক্ষতা আপনাকে অর্জন করতেই হবে নতুবা আপনাকে কেউ দাম দিবেনা। তাই স্কিল বিল্ডআপ করুন।

নিজের সম্পর্কে নোটডাউন করাঃ

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে নিজের সম্পর্কে ভালোভাবে স্টাডি করে নিজের আগ্রহ, শক্তি, দুর্বলতা ইত্যাদি সম্পর্কে নোট করে নেওয়া। কারণ আপনি যদি আপনাকে চিনতেই না পারেন তাহলে অন্য কেউ কেন আপনাকে চিনতে আসবে। আর আপনাকে কেনই বা ফ্রেশার হিসেবে চাকরি দিবে। তাই ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে হলে আপনার কোন বিষয়ে আগ্রহ আছে তা নোট করে নিয়ে সে বিষয়ে আরো বেশি বেশি স্টাডি করে নিজেকে দক্ষ করে তুলুন।

মনে করুন আপনার ভিডিও এডিটিং কাজের প্রতি খুব আগ্রহ আছে। আর আপনি সে বিষয়েই চাকরি করতে ইচ্ছুক তাই আপনি সে বিষয়েই শুধু স্টাডি করতে থাকবেন। আপনি যতই ফ্রেশার হয়ে থাকেন না কেন আপনি যদি স্পেসিফিক কাজের প্রতি অনেক আগ্রহ আছে তখন আপনি ফ্রেশার হিসেবেও সহজেই চাকরি পেয়ে যাবেন। তাই আপনি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ সে বিষয়টি নোটে লিখে নিয়ে ঐ বিষয়ে পড়তে থাকুন বা অভিজ্ঞ হয়ে উঠুন।

প্রমিত ভাষা শেখার উপায়ঃ প্রমিত ভাষা যেভাবে শিখবেন | ৬ষ্ঠ শ্রেণি ১ম অধ্যায় ও পরিচ্ছেদ

আবার অন্যদিকে আপনার যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্টে অনেক আগ্রহ আছে কিন্তু আপনি সে বিষয়ে একটু দুর্বলতা আছে। এটাও নোট ডাউন করে নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠুন। ঐ বিষয়ে বারবার অনুশীলন করুন। দেখবেন এবিষয়েও আপনি এক সময় অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন।

আপনার যদি ফ্রেশার হিসেবে ভিডিও এডিটিং এ খুবই দক্ষতা থাকে, অন্যদিকে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তির একটু কম জ্ঞান আছে এ বিষয়ে তখন কোম্পানি আপনাকে নিঃসন্দেহে নির্বাচন করবে। কারণ তারা নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে অভিজ্ঞ কাউকে নির্বাচন করে থাকেন। তাহলে এখান থেকে বুঝা গেল যে আপনি যদি একটি কাজে খুব অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ফ্রেশার হিসেবেও ভাল মানের চাকরি পেয়ে যাবেন।

প্রফেশনাল কোর্স করাঃ

মনে করুন আপনার “ভিডিও এডিটিং” এর প্রতি অনেক ঝোক রয়েছে এবং এই চাকরিটাই করতে চান তাহলে ঐ বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। মনে রাখবেন নির্দিষ্ট একটা বিষয়ে নিজেকে অভিজ্ঞ করে তোলা মানেই হলো ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায়। তাই এসব প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিলে সহজেই ভিডিও এডিটিং এ নিজেকে অভিজ্ঞ করে তুলতে পারেন। কারণ, আপনি যদি ভিডিও এডিটিং এ ৮০% শিখে থাকেন তাহলে এসব প্রতিষ্ঠানে আপনি প্রশিক্ষণ নিলে ১০০% শিখতে পারবেন।

কারণ নিজে নিজে শেখার চেয়ে ব্যাচ করে কোনো প্রতিষ্ঠানে শিখলে ঐ বিষয়ে আরো বেশি পারদর্শী হওয়া যায়। বাসায় বসে নিজে নিজে শিখলে নিজের ভুল নিজে ধরা যায় না। অথবা মার্কেটের সাথে তাল মিলিয়ে চলা যায়না। কারণ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররাই জানেন যে কোন বিষয়ে শিখলে ফ্রেশার হিসেবে সবার আগে চাকরি পাওয়া যাবে। তাই নির্দিষ্ট একটা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিলে ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পাওয়ার হার বেড়ে যায়।

সুখী মানুষ নাটকঃ সুখী মানুষ নাটকের ব্যাখ্যাসহ আলোচনা | ৬ষ্ঠ শ্রেণি বাংলা ২য় পরিচ্ছেদ

আমাদের দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে আপনি নির্দিষ্ট বিষয় ব্যতীত অনেক টপিকের উপর প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এরকম একটা অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হলো ওস্তাদ। এখানে আপনার পছন্দের বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে অভিজ্ঞ করে তুলতে পারেন। ওস্তাদের মত দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলো থেকেও আপনি কোর্স করতে পারেন। অনলাইন এবং অফলাইনে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখান থেকে আপনি প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে পারেন।

প্রফেশনাল রিজিউম বা কভার লেটার তৈরিঃ

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে প্রফেশনাল রিজিউম বা কভার লেটার তৈরি করা। আপনি কি কি বিষয়ে অভিজ্ঞ তার সারমর্ম উল্লেখ করে একটি কভার লেটার তৈরি করা আবশ্যক। যখন আপনি একটি কারিকুলাম ভিটা (সিভি) তৈরি করবেন তখন তার একটি কভার লেটার সুন্দর করে ডিজাইন করে নিবেন। আপনি যখন আপনার বানানো সিভি কোথাও ড্রপ করবেন তখন প্রতিষ্ঠান আপনার কভার লেটার দেখেই ধরে নিবেন যে আপনি ঐ কাজের প্রতি কতটা অভিজ্ঞ। তাই ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে হলে কভার লেটার তৈরি করা ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে ফ্রিতে আপনি আপনার সিভির কভার লেটার বানিয়ে নিতে পারবেন। আপনি তাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রফেশনালভাবে কভার লেটার ডিজাইন করে নিবেন। অথবা এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন তাহলে আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করে ভাল মানের একটি কভার লেটার ডিজাইন করে দেব। যেহেতু আপনি একজন ফ্রেশার তাই অন্যের তুলনায় আপনার কভার লেটারটি অনেক ভালমানে হতে হবে। অথবা আপনি যদি মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিজেই এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার মাধ্যমে সুন্দর একটি কভার লেটার ডিজাইন করতে পারবেন।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে কভার লেটার বানানোর অনেক টেমপ্লেট পাওয়া যায়, যেগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার সিভিকে অনেক আকর্ষণীয় করতে পারবেন। মনে রাখবেন প্রতিষ্ঠানের ভাইভা বোর্ডে সবার আগে নিজেকে ভালভাবে উপস্থাপন করতে হবে। আগে নিজেকে দর্শনধারী করতে হবে তারপর আপনার গুণ বিচার করার সুযোগ তৈরি করতে দিবেন। তাই ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে হলে একটি কভার লেটার ডিজাইন করার গুরুত্ব অপরিসীম।

ইন্টারভিউয়ের কমন প্রশ্নের প্রস্তুতি নিয়ে রাখাঃ

যেহেতু আপনি একজন ফ্রেশার তাই ইন্টারভিউয়ের কমন প্রশ্নের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে ফ্রেশার হিসেবে ভালমানের একটি চাকরি পাওয়া যায়। ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে সরকারি বা বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় আসা ইন্টারভিউয়ের কিছু কমন প্রশ্ন রয়েছে তা আগে থেকেই আয়ত্ব করে নেওয়া। আপনি নিজেকে ফ্রেশার হিসেবে উপস্থাপনের জন্য আগে থেকেই এসব প্রশ্নের ভালমত একটা প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন। তাহলে অন্যান্য প্রতিযোগীদের থেকে অনেকাংশে এগিয়ে থাকবেন। বর্তমান যুগ যেহেতু অনেক প্রতিযোগিতার যুগ তাই একটু কৌশল করে সেব প্রশ্নের ব্যাখ্যাসহ মুখস্থ করে নিবেন।

ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ইন্টারভিউয়ের কিছু কমন প্রশ্ন অনেকেই শেয়ার করে থাকেন। তাছাড়া অনেক ওয়েবসাইটেও এসব প্রশ্নের পিডিএফ পাওয়া যায়। সেগুলো সংগ্রহ করে মুখস্থ করে নিবেন। ফেসবুকের চাকরি সংক্রান্ত অনেক গ্রুপ রয়েছে যেখানে অনেক প্রশ্নোত্তর পাওয়া যায়। সেগুলো সংগ্রহ করে প্রিন্ট করে নিবেন। মনে রাখবেন এসব প্রশ্ন অনেক চাকরির ভাইভা পরীক্ষায় সচরাচর আসা দেখা যায়। তাই নিজেকে আগে থেকেই চাকরির জন্য পারফেক্টভাবে উপস্থাপনের জন্য ইন্টারভিউয়ের কমন প্রশ্নগুলো আয়ত্ব করলে ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে তা অনায়াসেই বলা যায়।

বিভিন্ন প্রজেক্ট থেকে অভিজ্ঞতা অর্জনঃ

ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে বিভিন্ন ফোরাম, ইভেন্ট বা প্রজেক্টে কাজ করে আগে থেকেই কিছু অতিরিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করে নেওয়া। অনেকেই পড়াশুনার চাপে এসব কার্যক্রমে নিজেকে জড়াতে চান না। এ কাজ টা না অনেক ফ্রেশার ভুল করে থাকেন। এসব কার্যক্রমে নিজেকে জড়ালে আগে থেকেই অনেক অভিজ্ঞ হওয়া যায়। কারণ এসব প্রোগ্রামে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিখ্যাত লোকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে তাদের সফলতার গল্পগুলো শুনানো হয়। সফলতার গল্প শুনলে নিজেকেও তাঁদের কাতারে মনে হতে পারে। তাঁদের ভাষণ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

আবার বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করার মাধ্যমেও অভিজ্ঞ হওয়া যায়। কারণ সেসব প্রজেক্টে চাকরি পাওয়ার পরও করতে হতে পারে। কারণ একেক কোম্পানির একেকরকম মিশন এবং ভিশণ রয়েছে। তাই আপনি যদি ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রজেক্টে কাজ করে নিজেকে আগে থেকেই অভিজ্ঞ করে তুলতে পারেন তাহলে এই অভিজ্ঞতা ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে অনেক সাহায্য করবে।

আবার বিভিন্ন রাজধানী শহরে বিভিন্ন দিবসে জব ফেয়ার হয়ে থাকে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন কোম্পানিতে সিভি ড্রপ করতে পারেন। কারণ অনেক কোম্পানি ঐ চাকরির মেলা থেকে ফ্রেশারদের তাঁদের কোম্পানিতে চাকরি করার জন্য আহবান করে থাকেন। তাহলে বিভিন্ন শহরে চাকরির মেলায় যোগদানের মাধ্যমে আপনার ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যাবে।

ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্নশিপ করাঃ

সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে ভালমানের প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্নশিপ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর আপনাকে ইন্টার্নশিপ করলে নিজেকে আরো অভিজ্ঞ করে তোলা যায়। এমনও হতে পারে যেসব প্রতিষ্ঠানে আপনি ইন্টার্নশিপ করছেন সে প্রতিষ্ঠানে আপনার অভিজ্ঞতা এবং ট্যালেন্ট দেখে চাকরি হয়ে যেতে পারে। তাই ভালমানের প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করার গুরুত্ব অপরিসীম।

ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্নশিপ করার ফলে সিভিতে কোম্পানিগুলোর আপনার প্রতি পজিটিভ ধারণা আসে। আপনি যদি ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্ন করে থাকেন তাহলে খুব সহজেই ঐ কাজের প্রতি দক্ষ হয়ে উঠবেন। আমাদের দেশে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে বিনামূল্যে ইন্টার্ন করার জন্য অনুমতি দিয়ে থাকে। আবার ইন্টার্ন শেষে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্মানীও প্রদান করা হয়ে থাকে। তাই এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্ন করা থাকলে ফ্রেশার হিসেবে চাকরির পাওয়ার গুরুত্ব বেড়ে যায়।

শেষকথাঃ

উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়ার সহজ উপায় অনেক রয়েছে। আপনি যদি ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতেই চান তাহলে উপরে বর্ণিত স্পেশিফিক বিষয়ের পাশাপাশি আরো বিষয়ে আপনাকে অভিজ্ঞ করে তুলতে হবে। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেকে একটা বিষয়ে অভিজ্ঞ না করে তুলতে পারলে চাকরি নামের সোনার হরিণের দেখা পাবেন না। তাই কোম্পানিগুলোর চাহিদামাফিক যেকোন একটা কাজে নিজেকে ছাত্রজীবন থেকেই অভিজ্ঞ করে তুলুন তাহলে দেখবেন পড়া শেষ হতে না হতেই একটা চাকরি পেয়ে গেছেন। তাই এক কথায় বলা যেতে পারে যে, ফ্রেশার হিসেবে চাকরি পেতে হলে নিজেকে দক্ষ করে তুলুন। আশা করি এই পোস্টটি আপনার ভাল লেগেছে। উপরে টিপসগুলি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নিত্য নতুন এ সংক্রান্ত পোস্ট পেতে আমাদের ব্লগকে ফলো করে রাখুন। ধন্যবাদ।

Visited 270 times, 1 visit(s) today

Leave a Comment