৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। শেষ মুহূর্তে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন।
বিসিএস প্রিলিমিনারিতে সর্বমোট ২০০টি এমসিকিউ–ভিত্তিক প্রশ্ন থাকে। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর ও ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ৫০ নম্বর কাটা যায়।
বিসিএসের তিনটি ধাপের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে প্রিলিমিনারি। এ ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক বেশি। প্রিলির প্রশ্নপদ্ধতি এমসিকিউ–ভিত্তিক হওয়ায় সঠিক উত্তর বের করতে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। ভুল হলেই নেগেটিভ মার্কিংয়ের শঙ্কা থাকে। আগের বিসিএসগুলোয় প্রিলিতে কাটমার্ক কখনোই ১২৫ অতিক্রম করেনি। তাই বলা যায়, অন্তত ১২৫ থেকে ১৩০ নম্বর পেলেই প্রিলিতে পাস করার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য (৩৫ নম্বর)
আগের কয়েকটি বিসিএসে বাংলা ব্যাকরণের ধ্বনি, শব্দ, বানান ও বাক্যশুদ্ধি থেকে বেশি প্রশ্ন এসেছে। তাই এগুলো বেশি ফোকাস করুন। এ ছাড়া সন্ধি, প্রত্যয়, সমাস এবং ফরাসি, পর্তুগিজ, হিন্দি ও ফারসি শব্দগুলো পড়ুন। বাংলা সাহিত্য থেকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্কিমচন্দ্র, মধুসূদন, জসীমউদ্দীন, মীর মশাররফ, ঈশ্বরচন্দ্র, পত্র-পত্রিকা এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে।
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য (৩৫ নম্বর)
ইংরেজি ভাষা থেকে পার্টস অব স্পিচ, বাক্যশুদ্ধি, বাক্য রূপান্তর ও বাগ্ধারা পড়ুন। আগের প্রিলিমিনারির প্রশ্নগুলো বুঝে বুঝে সমাধান করুন। শেষ সময়ে ভোকাবুলারি পড়ার প্রয়োজন নেই। ইংরেজি সাহিত্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম বেশি পড়তে হবে। তাঁদের মধ্যে শেক্সপিয়ার, বার্নার্ড শ, টি এস এলিয়ট, ডব্লিউ বি ইয়েটস, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, এস টি কোলরিজ, চার্লস ডিকেন্স ও রবার্ট ব্রাউনিং অন্যতম। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কোটেশন ও লিটারেরি টার্মস পড়তে পারেন।
কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি (১৫ নম্বর)
আগের কয়েকটি বিসিএসে এ বিষয়ে কিছুটা কঠিন প্রশ্ন হয়েছে। শেষ মুহূর্তে বিস্তারিত না পড়ে কমন টপিকগুলো বেশি রিভিশন দিতে হবে। কম্পিউটার পেরিফেরালস, অপারেটিং সিস্টেম, কম্পিউটারের অঙ্গসংগঠন, নম্বর ব্যবস্থা, নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সম্পর্কে গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।
সাধারণ বিজ্ঞান (১৫ নম্বর)
সাধারণ বিজ্ঞানের আগের প্রিলিমিনারির প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ পড়তে হবে। ভৌতবিজ্ঞানে টপিক বেশি থাকায় শেষ মুহূর্তে জীববিজ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানে জোর দিতে পারেন। সব না পড়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো বারবার রিভিশন দিতে হবে।
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা (৩০ নম্বর)
যাঁরা বোর্ড বইভিত্তিক গণিতের প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাঁদের জন্য বিসিএস প্রিলিমিনারি ও রিটেনে ভালো করা অনেক সহজ হবে। শেষ সময়ে গাণিতিক যুক্তির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো ভালোভাবে রিভিশন দিতে হবে। শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, বীজগাণিতিক সূত্রাবলি, সূচক ও লগারিদম, ধারা, সেট, সমাবেশ ও সম্ভাব্যতা বেশি অনুশীলন করতে হবে। মানসিক দক্ষতা প্রিলিমিনারি ও লিখিত সিলেবাস একই। কিছু কৌশল রপ্ত করলে এই অংশে ভালো করা খুব সহজ। গণিতে দুর্বলতা থাকলে মানসিক দক্ষতায় বেশি জোর দিতে হবে।
বাংলাদেশ বিষয়াবলি (৩০ নম্বর)
ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, জনসংখ্যা, উপজাতি, কৃষিজ সম্পদ, অর্থনীতি, জাতীয় অর্জন ও বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞানের সর্বশেষ তথ্যগুলো জেনে নিতে হবে।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (২০ নম্বর)
বৈশ্বিক ইতিহাস, ভূরাজনীতি, জলবায়ু, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠন সম্পর্কে বেশি জোর দিয়ে পড়তে হবে। সাম্প্রতিকের জন্য বিভিন্ন জোট, সম্মেলন, চুক্তি, সূচক, পদক-পুরস্কার ও সর্বশেষ আলোচিত ঘটনাপ্রবাহ জেনে রাখা উচিত।
ভূগোল, নৈতিকতা ও সুশাসন (২০ নম্বর)
ভূগোলে ভালো করার জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মানচিত্র অনুসরণ করে তথ্যগুলো শিখে নিতে পারেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রকৃতি ও সম্পদ বেশি পড়তে হবে। নৈতিকতা ও সুশাসনের জন্য মূল্যবোধ শিক্ষা ও সুশাসনের সংজ্ঞা, উপাদান, বিভিন্ন সংস্থার বক্তব্য, অভাবজনিত প্রভাব এবং বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি ভালোভাবে পড়ে যেতে হবে।
সূত্র : প্রথম আলো