সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগ: প্রাথমিকে আসছে ৫১৬৬ পদের বিজ্ঞপ্তি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। তবে এখনই সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদ দুটিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে না। ক্লাস্টারের ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। আর নিয়োগবিধি সংশোধনের পরই প্রকাশ করা হবে বিজ্ঞপ্তি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, একেকটি জেলা-উপজেলায় ২০ থেকে ২৫টি বিদ্যালয় মিলে একটি করে ক্লাস্টার হয়। এই হিসাবে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ক্লাস্টার রয়েছে ২ হাজার ৫৮৩টি। একটি ক্লাস্টারের জন্য একজন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নেওয়া হবে। ২০ থেকে ২৫টি বিদ্যালয়ের জন্য একজন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তাঁদের পদবি হবে সহকারী শিক্ষক। এই পদের গ্রেড অনুসারে বেতন হবে। তাঁরা স্কুলে ঘুরে ঘুরে শিক্ষার্থীদের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেবেন। তবে তাঁদের অফিস কোথায় হবে, সে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

ক্লাস্টারের হিসাবে দুটি পদ মিলে মোট ৫ হাজার ১৬৬ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে সংগীত বিষয়ে ২ হাজার ৫৮৩ জন ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে ২ হাজার ৫৮৩ জন। এই দুই বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে পদ সৃজন করা হয়েছে। জনপ্রশাসন ও অর্থ বিভাগে শর্ত অনুসারে পদ দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯–এ অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগ কার্যক্রম গৃহীত হবে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। এ পদে নিয়োগের জন্য বিধি সংশোধনের প্রস্তাব ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য কী কী যোগ্যতা লাগবে, কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে—এসব বিষয় পরিষ্কার করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ সংশোধনের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ইতিমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নিয়োগবিধি সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে।

৫ হাজার ১৬৬ পদের জন্য কবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘নিয়োগবিধি সংশোধনের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। সাধারণত তিন মাসের মতো সময় লাগে। আশা করছি, নিয়োগবিধি সংশোধনের পর আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই দুই বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২০২২ সালের ৮ মে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। আটটি শর্তে সহকারী শিক্ষকের এই দুই পদ সৃষ্টিতে সম্মতি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়নাধীন চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় ৫ হাজার ১৬৬টি সহকারী শিক্ষক (সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা) পদ বছর বছর সংরক্ষণের ভিত্তিতে অস্থায়ীভাবে রাজস্ব খাতে সৃজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি দেওয়া হলো।

শিক্ষক নিয়োগের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়। যেসব শর্তের কথা চিঠিতে বলা হয়েছে, সেগুলো হলো অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের সম্মতি নিতে হবে, অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ থেকে বেতন স্কেল নির্ধারণ করতে হবে, প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে, যে তারিখে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে পদ সৃষ্টির সরকারি আদেশ জারি করা হবে, সে তারিখ থেকে পদগুলো সৃষ্টি হবে, অস্থায়ী পদের ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সরকারি আদেশ অনুসরণ করতে হবে, সহকারী শিক্ষক (সংগীত) ও সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদ নিয়োগ বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগ দিতে হবে, পদ সৃষ্টির চূড়ান্ত আদেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সব শর্ত অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে এবং পদ দুটি সৃষ্টিতে অর্থ বিভাগের সম্মতিপত্রের কপি ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের পদ সৃষ্টির সরকারি আদেশের কপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগে পাঠাতে হবে।

Visited 24 times, 1 visit(s) today